মাঝে মাঝে মনে হয় আমি একা বসে আছি। একটা খালি মাঠের এক কোনে, বিলের পাশের নিচু ঢালে। শুয়েও পড়তে পারি, যদি ইচ্ছে হয়। তারপর কি করব জানি না। আমি অনেক ঘুমকাতুরে। ঘুমাতেও পারি। ঘুমের ঘোরে নাকও ডাকতে পারি।
একটা কথা বলার পর সে রেগে গেলো। মনে ঝড় বইলে এমনই হয়। হুট করে সবাই রেগে যায়। আমাকে দেখলে তো সবারই রাগতে ইচ্ছে করে। অনেকক্ষণ ধরে, কিংবা বলতে পারো দুই দিন ধরে আমার মনটা অনেক অস্থির। এমনিতেই, হয়তো অনেক ঘুম পাচ্ছে তাই।
আমার কাছে ঘুম একটা মৌলিক অধিকার। প্রথম মৌলিক অধিকারের সাথে সে ফার্স্ট পজিশন নিয়ে বসে আছে। ঘুমাধিকার নিয়ে আমি অনেক সময় তর্কে যেতেও পারি।
আমার আসলে ঘুমের ঘোরে অনেক কিছু ভাবতে ভালো লাগে। এখনটা যেমন হচ্ছে। মনে হচ্ছে টানা সাত দিন ঘুমাই নাই। খুব একটা তাড়া আছে, সেই তাড়া নিয়ে আমি সমগ্র ঢাকাবাসীর সাথে ট্রাফিক জ্যামে আটকে আছি। কিছু করতে পারছি না, আবার কিসের একটা তাড়া। ঘুমের তাড়া হয়ত...
একটা সময় সবার সব কিছুতেই একটা দায়বদ্ধতা ছিল। ভালবাসার দায়, সম্মানের দায়, বোঝার দায়, না বোঝার দায়, সম্পর্কের দায়। এগুলো সব মরে যাচ্ছে। দায়বদ্ধতা এখন কর্পোরেট। দায় এখন পকেট ভারী রাখার, নতুন গাড়ি চড়ার, ছুটিতে মালদ্বীপে যাবার। আমার আছে ঘুমের দায়। একফোটা ঘুমের কমতি হলে হুলুস্থুল বেধে যায়।
শেষবার যখন এভাবে জেগে জেগে লিখি, তখন অনেক ইচ্ছে ছিল লিখবার। এখন সেটা মরে গেছে কিছুটা দায়িত্বের চাপে, কিছুটা অযোগ্যতার অনুধাবনে। মাঝে মাঝে মনে হত, বাঁড়া কি যা তা লিখছি! এগুলো লিখে কিছু হবে না। তারচে' ঘুমাই।
আমার একটা ঘুমের গল্প আছে। সবাইকে বোকা মনে বলি। গল্পটা শুনে দেখি কে কি ভাবে। সামনে কেউ বলে না। পিছনে বলে। ওটাই এখন চলছে। বাঙালীর মজা গদিতে আর স।মালোচনায়। সে মনে করে কায়ক্লেশে সংসার না চালাতে চাইলে এখন পুজিবাদি হও, মজলিশে টাকার গল্প আর দরকারী তেল ঢালো। জীবন বদলে যাবে। আমি পারি নাহ্। আমার আসে কেবল ঘুম।
রাত অনেক হচ্ছে। ও ঘুমাচ্ছে। আমি ভাবছি এ ঘুমের ঘোরটা অনেক আলাদা। নেশাতুর না, কিন্তু ঘোলাটে। খেলাটা এখানেই।