Friday, November 25, 2011

হয়ে যাই আনমনা এক অতিথি পাখি

কাউকে যখন শুনি দেশের ভেতর কোথাও গিয়ে ঘুরে এসেছে, তখন খুব হিংসে হয়।


এই ব্যস্ত শহরের সবচাইতে অলস মানুষের মত নির্জীব হয়ে থাকার মাঝেই মনে হয় আমি সবচে' বেশি আনন্দ পাই। আবার একলা ঘরে বসে বসে এক সময় খুব হাঁপিয়ে উঠি। মনে হয়, ঘুরে আসলে মন্দ হত না।





আমার মত অনেকেই আছে যারা রাত-বিরাতে কম্পুকানার মত ল্যাপটপ কিংবা পিসির সামনে বসে সময় কাটাচ্ছে। কিন্তু একটি বারের জন্য কি মনে হয় না, এ জঞ্জাল ছেড়ে বেড়িয়ে আসি?

অনেকে আবার বেড়াতে যান। সাথে থাকে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব। প্রেমিকাও থাকে বইকী।আনন্দে কাটে প্রত্যেকটা মুহুর্ত। বাবা-মাকে ঘুরিয়ে দেখানোর আনন্দ, বন্ধুদের সাথে ছবি তোলার আনন্দ, প্রিয়জনকে কাছে পাবার আনন্দ। কিন্তু নিজে কি আসলে বেড়িয়ে আসেন ? একা? সারা শহরটি দাপিয়ে বেড়াই সবাইকে ছেড়ে , অথচ পরিবারকে সাথে নিয়ে বেড়াতে গিয়ে নিজেকে একা করে ফেলি না তো?


আমার এক নিকটাত্মীয় চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত অবিবাহিত ছিলেন। নানান সময়ে নানা জায়গায় ঘুরে আসাটা তার স্বভাব ছিল। আসলে বড় ভাই-বোনের আদরে মানুষ হয়েছিলেন, কাজেই সংসার ধর্ম তার ধাতে ছিল না বললেই চলে। সময়ে সময়ে নিখোঁজ হয়ে যেতেন, আবার হঠাৎ বাড়ি এসে উপস্থিত। হয়তো তার সময় ছিল, কাজ ছিল না, তাই ঘরে বসে না থেকে দেশের এ-প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরে আসতে তার কোন বাধাই ছিল না। একলা এই মানুষটাকে যখন জিজ্ঞেস করতাম , এইবার কি হল, তখন তার চোখের আভা দেখেই বাকিটা আন্দাজ করা যেত।


 সংসার কারাগার ভেঙ্গে ফেলতে বলছি না। এ নিয়ম ভাঙ্গার কোন দরকারই নেই। যখন ফুসরত মিলবে, তখন ঘুরে আসুন প্রকৃতির বুকে, প্রকৃতির রঙ দেখুন, মন সতেজ করুন। মানুষের ভীড়ে হারিয়ে যাবেন না, প্রকৃতির বুকে হারান। এক মুঠো মাটির গন্ধ কত দিন নেয়া হয়না, বলুনতো ? কতদিন জ্বর হবে ভেবে বৃষ্টিতে ভেজেন নি? একা রাস্তার ধারে কতদিন হাঁটেননি? কতদিন চিৎকার করে কিছু বলেননি? কক্সবাজার,জাফলং এ আর কত ঘুরবেন?

শীত এসে পড়েছে।কাগজ কলম নিন, ল্যাপটপকে বিদায় দিন, ক্যামেরাটা হাতে নিন। আসুন বেড়িয়ে পড়ি। নিজেকেও বললাম, সবাইকেও তাগাদা দিলাম। এই মৌসুমে জীবনের স্মরণীয় ভ্রমণ করুন।হয়ে যান নিজের দেশের আনমনা এক অতিথি পাখি।

ঘুমনামা

মাঝে মাঝে মনে হয় আমি একা বসে আছি। একটা খালি মাঠের এক কোনে, বিলের পাশের নিচু ঢালে। শুয়েও পড়তে পারি, যদি ইচ্ছে হয়। তারপর কি করব জানি না। আমি অ...