Friday, June 4, 2010

নিমতলী ট্র্যাজেডি...কেন এমন হয়?

কালকে রাতে আমি সন্ধ্যায় বাসায় আসি; একটু ঢাকা নিউমার্কেট গিয়েছিলাম। গোসল করে একটু টিভির চ্যানেলগুলো ঘুরাচ্ছিলাম। এটিএন নিউজ এ নিউজ বারে চোখ পড়তেই দেখি, কায়েতটুলী এলাকায় ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণের কারণে আগুন লেগেছে।(picture courtesy: Prothom alo)

আমার খালার বাসা কায়েতটুলীতে। তাড়াতাড়ি বাবাকে বললাম , আম্মা যেন একটা ফোন করে খালাকে। ওদিকে আমার অন্য আরেক খালা ফোন অরে বললেন, ওই খালার বাসার পাশেই আগুন লেগেছে। একটু আতংকিত হলাম।বার বার চ্যানেলগুলো বদলাতে লাগলাম আর খবর দেখতে লাগলাম।

যা দেখলাম, তা আসলেই ভয়াবহ। ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লাগে একটা বাড়ির নিচে গোডাউনে।ওখানে রাখা দাহ্য পদার্থ আগুন আরো বাড়িয়ে দেয়।ওই বাসায়, কিংবা বাসার আশেপাশে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিলো।সে বাড়ির কি অবস্থা হয়েছে তা কি ভাবা যায়?

ওই বাড়ির ২ টি রুমেই মারা যায় ৪৭ জনের লাশ। আগুনের লেলিহান শিখা আর দম বন্ধ করা ধোয়াঁ এতগুলো প্রাণ কেড়ে নিলো।ফায়ার সার্ভিস দ্রুত আসলেও পানির সঙ্কট, ছোট রাস্তা, আর উৎসুক জনতার কারণে যা করণীয় তা করতে পারেনি, লাশ উদ্ধার আর ঘটনার শেষে আগুন নেভানো ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারেনি।

হাস্পাতালে দেখা গেলো এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে কেবল লাশ আর লাশ...অগ্নিদগ্ধ মানুষের লাশের সারি। নিহতদের স্বজনরা শুধু নয় হাসপাতালে থাকা যে কেউ মানুষ-ই এই দৃশ্য দেখে চোখের জল সামলাতে পারেনি।এমনকি হাসপাতালের একজন সেবিকা এই মৃতদের কাতারে শামিল হয়েছিলেন।

রাত যত বাড়ছিল, লাশের সংখ্যা আরো বাড়তে লাগলো।মানুষের আহাজারি শুনে মন যে কতটা খারাপ হচ্ছিল, তা বললে বুঝাতে পারবোনা।খালারা নিরাপদে ছিলেন,তাদের কোন problem হয়নি, কিন্তু এতোগুলো মানুষের হাহাকার শুনে কি যে বিষাদময় লাগছিলো, তা বলে বোঝানো যাবে না।

আজ সকালে আবার দেখলাম ওই ভবনগুলোর অবস্থা...পুরো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গোটা এলাকা। কাল রাতে যেন কেয়ামত হয়ে গিয়েছে এখানে। বিয়ে বাড়িতে খাবার আছে, কিন্তু সে খাবার যাদের জন্য রান্না করা হয়েছিলো, তারা তো আর নেই।

তারা আর আসবেনা। আমাদের কে অশ্রুসজল করে তারা ছলে গেছেন দূরে, অনেক দূরে। তাদের জন্য আমাদের সমবেদনা থাকল। আসুন, আমরা এই জাতীয় শোককে শক্তিতে পরিণত করি।

No comments:

ঘুমনামা

মাঝে মাঝে মনে হয় আমি একা বসে আছি। একটা খালি মাঠের এক কোনে, বিলের পাশের নিচু ঢালে। শুয়েও পড়তে পারি, যদি ইচ্ছে হয়। তারপর কি করব জানি না। আমি অ...